ভুটান যাওয়ার উপায়। ভুটান যেতে কত টাকা লাগে

শান্তিপ্রিয় ছোট একটি দেশ ভুটান। ছোট-বড় পাহাড় ঝর্ণা ও সবুজ অরণ্য মিলিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ ভুটান দেশটি। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা ও ঠান্ডা মনোমুগ্ধকর পরিবেশের কারণে অনেকের কাছে দেশটি আলাদা মাত্রা পেয়েছে। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক অবসর সময় কাটানোর জন্য ভুটানে এসে থাকেন। আজকের পোস্টটিতে ভুটান যাওয়ার উপায় ও ভুটান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে যা ভুটান সম্পর্কে আপনাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে। 

ভুটান যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে ভুটানে খুব সহজেই দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করে যাওয়া যায়। যেমন:-

➡️ সরাসরি বিমানের মাধ্যমে 

➡️ বাই রোড বা সড়ক পথের মাধ্যমে 

এই দুইটি পদ্ধতি ভুটান যাওয়ার জন্য খুবই কার্যকর। বাংলাদেশ থেকে বাই রোডের মাধ্যমে সড়ক পথে ভুটান যাওয়ার সুবিধা রয়েছে কেননা বাংলাদেশ থেকে ভুটানের দূরত্ব খুবই কম। সড়ক পথে যারা ভুটান যেতে চান তাদের প্রথমে ভারত হয়ে যেতে হয়। যারা সড়কপথে ঢাকা থেকে ভুটান যেতে চান তাদের একদিনের মতো সময় লেগে থাকে। তবে সড়ক পথে ভুটান যাওয়ার সুবিধা হলো ভ্রমণ খরচ অনেক কম লাগে। 

ভুটান ভিসা প্রসেসিং করার উপায় 

বাংলাদেশ থেকে ভুটান যাওয়ার অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন বাংলাদেশীদের ভুটান যাওয়ার আগে কোন ধরনের আগে থেকে ভিসার প্রয়োজন হয় না। আপনারা যেভাবেই ভুটান যান না কেন ইমিগ্রেশনে অন এরাইভাল ভিসা নিতে পারবেন। ভুটানের ইমিগ্রেশনে আপনারা পাসপোর্ট দেখালে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ভূটানে যেতে পারবেন। 

ভুটানের ইমিগ্রেশন থেকে সাধারণত ৭ দিনের পারমিট দেওয়া হবে। এই অনুমতি দিয়ে আপনারা খুব সহজেই ভুটানের রাজধানী থিম্বু ও পারো ঘুরতে পারবেন। কোন ব্যক্তি যদি ভুটানের অন্যান্য জায়গা ভ্রমণ করতে চান বা সাত দিনের বেশি অবস্থান করতে চান তাহলে থিম্বু ইমিগ্রেশন অফিস থেকে আলাদা করে আপনাদেরকে পারমিট নিতে হবে। 

বাংলাদেশ থেকে ভুটান বিমান ভাড়া কত। ঢাকা টু ভুটান বিমান ভাড়া ২০২৩

বাংলাদেশ থেকে ভুটান যেতে বিমান ভাড়া কত লাগে বা  বাংলাদেশ থেকে ভুটান ফ্লাইট খরচ কত এই বিষয়ে অনেকেরই জানা নেই। বাংলাদেশ থেকে ভুটান ডার্ক এয়ার এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে গেলে ২৬ হাজার টাকা থেকে ৩০০০০ টাকার মত খরচ আসতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ভুটান যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটি বিমান চলাচল করে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানের মাধ্যমে ভুটান গেলে এক ঘন্টা ১৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা ২৫ মিনিট সময় লাগে। 

ভুটান অন এ্যারাইভাল ভিসার জন্য কি কি লাগবে 

ভুটান অন এরাইভাল ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট অবশ্যই লাগবে।। আপনাদেরকে ইমিগ্রেসনে যাওয়ার আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় এই ডকুমেন্টগুলো ব্যবস্থা করে নিতে হবে।যেমন:-

১.ভুটানে প্রবেশের দিন থেকে কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদের পাসপোর্ট লাগবে। 

২.পাসপোর্টের ইনফরমেশন পৃষ্ঠার এক কপি ফটোকপি লাগবে। 

৩.ভুটান যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তির অবশ্যই পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে। 

৪.হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র লাগবে। 

৫.পূরণকৃত এন্ট্রি ফরম লাগবে। 

অনেকেই এন্ট্রি পারমিট ফরম কোথায় পাবেন এই বিষয়ে চিন্তায় থাকেন। এন্ট্রি ফরম আপনারা বিমানে অথবা ইমিগ্রেশন এর থেকে খুব সহজেই নিয়ে নিতে পারবেন। তবে ফর্মটি নেওয়ার পর অবশ্যই ফর্মে উল্লেখিত যে সকল তথ্য চাইবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে সে সাহায্য করতে পারবে। 

বাই রোড ভ্রমণে ভারতের ট্রানজিট ভিসা 

ট্রানজিট ভিসা বলতে আমরা বুঝে থাকি কোন দেশের উপর দিয়ে বা ভূখণ্ড ব্যবহার করে অন্য দেশে ভ্রমণ করার অনুমতি পত্র। বাই রোডে বাংলাদেশ থেকে ভুটান যেতে হলে অবশ্যই আপনাদেরকে ভারত হয়ে যেতে হবে। তাই বাই রোডে ভুটান যেতে হলে অবশ্যই ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হয়। 

এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ভারত ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে আবেদনকারীরা ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই মেয়াদী ট্রানজিট ভিসা পেয়ে থাকেন। ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা নিম্নে  তুলে ধরা হলো:-

১.ছয় মাস মেয়াদী একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে ও তার ফটোকপি লাগবে। 

২.পূর্বে কখনো ভারত ভ্রমণ করে থাকলে সেই ভিসার ফটোকপি লাগবে। 

৩.পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে অবশ্যই সেটা জমা দিতে হবে। যদি পুরাতন পাসপোর্ট হারিয়ে যায় তাহলে জিডি কপি জমা দিতে হবে। 

৪.অনলাইনে পূরণকৃত ভারতের ভিসা ফরমের প্রিন্ট কপি লাগবে। 

৫.সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড তোলা ২ ইঞ্চি ছবি লাগবে। 

৬.বর্তমান ঠিকানার সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিল লাগবে। 

তাছাড়া আরও যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাদেরকে সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে খুব সহজেই ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে জমা দিতে পারবেন। 

ভুটান ভিসা খরচ কত। ভুটান যেতে কত টাকা লাগে

ভুটান যেতে বাংলাদেশি পর্যটকদের ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার মতো খরচ আসতে পারে। অন্যান্য বিদেশি পর্যটকদের ভুটান ভ্রমণ করতে খরচের পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার হলেও বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সেটা অনেকটাই কম। 

ভুটানের মুসলিম জনসংখ্যা কত

ভুটান যাওয়ার আগে অবশ্যই ভুটানে মুসলিম জনসংখ্যা কত এই বিষয়ে কমবেশি ধারণা নিয়ে নিতে হবে। ভুটানে মোট জনসংখ্যার ০.১ শতাংশ থেকে ০.২ শতাংশ মুসলিম। অর্থাৎ তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে ভুটানে মুসলিম জনসংখ্যা অনেক কম। 

ভুটানের আইনসভার নাম কি 

অনেকেই আছেন যারা ভুটানের আইনসভার নাম জানেন না। ভুটানের আইনসভার নাম হচ্ছে পার্লামেন্ট অফ ভুটান। এই আইনসভার মাধ্যমে ভুটানের যাবতীয় আইন সংক্রান্ত কাজকর্ম পরিচালিত হয়ে থাকে।

ভুটানের মুদ্রার নাম কি। ভুটানের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা 

যারা ভুটান ভ্রমণ করতে চান তাদের মধ্যে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে ভুটানের মুদ্রার নাম কি বা ভুটানের এক টাকা সমান বাংলাদেশের কত টাকা। ভুটানের মুদ্রাকে গুলট্রাম বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে ভুটানের এক টাকা সমান বাংলাদেশি ১.৩২ টাকার কাছাকাছি। ভুটানের ১০০০ টাকা সমান বাংলাদেশি ১৩২০ টাকা।

You May Also Like

About the Author: Aakash Khan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *